রহস্য দিঘী: দ্বিতীয় পর্ব
রহস্য দিঘী: পর্ব দ্বিতীয়
তাই ওরা চার বন্ধু মিলে পণ করলো, এর পিছনে যাদের হাত আছে তাদের খুঁজে বের করে শাস্তি দেবে ওরা। রনি জানতে চাইলো, "জেলেরা কোন ধনী ব্যাক্তির কথা বলছিল?
হারা বললো," মদনমোহন বাবু, তার কথাই বলছিল ওরা, ওটা ভীষণ চালাক, পয়সার জন্যে সব কিছু পারে, ধূর্ত, লোভী " পান্না বললো," লোক ঠকিয়ে বড়লোক হয়েছে, গ্রামের মানুষের সরলতা কে হাতিয়ার বানিয়ে লুঠ করেছে অনেকের জমি, সম্পত্তি। "
রনি বললো, কাল তাহলে মামার সাথে গিয়ে একবার আলাপ সেরে আসব, কি বলিস?
সবাই বললো, তা যাও, কিন্তু তার টিকি ও ছুঁতে পারবে না, বড্ড চালাক!
-বেশ তবে দেখাই যাক।
সত্যের জন্য একটা চান্স নিতেই হবে, না জানি শিয়াল টা আরো কত ক্ষতি করবে সরল মানুষ গুলোর, এই বলে একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে রনি মামা বাড়ি চলে এলো,
মামা কে সমস্ত টা জানালো,
মামী রান্নাঘর থেকে শুনতে পেয়ে বললো, ওর জন্য ছোটবেলায় একবার হেনস্থা হতে হয়েছিল আমার এক বান্ধবী কে.. লজ্জায় অপবাদে পরিবার সহ গ্রাম ছাড়া হতে হয়েছিল তাকে। সরল গ্রামের মেয়ে গুলোর না জানি কত সর্বনাশ করেছে শিয়াল টা, আমি চাই ওর শাস্তি হোক, পয়সার জোর সব কিছুকে ধামাচাপা দিয়ে এসেছে রে রনি, আমরা ওর কাছে বিক্রি হয়ে যাব।
মামা বললো, দেখ বাবা আমরা এই গ্রামের লোক, তুই তো দুদিন বাদে ফিরে যাবি শহরে, আমাদের এখানে থাকা দায় হবে ছেড়ে দে এসব।
রনি বললো, তা বেশ মামা, ছেড়ে দিলাম, তবে একবার আলাপ করতে দোষ কি? সাথে শহর থেকে আনা আমার দামী হাতির দাঁতের পেন দানী টা gift হিসেবে দিয়ে আসবো, বড়লোক মানুষের মন পেয়ে লাভ আছে, তোমাদের পক্ষেও তা ভালো হবে।
মামা বলল, বেশ কাল সকালে নিয়ে যাব ক্ষণ...
....................................................তাই ওরা চার বন্ধু মিলে পণ করলো, এর পিছনে যাদের হাত আছে তাদের খুঁজে বের করে শাস্তি দেবে ওরা। রনি জানতে চাইলো, "জেলেরা কোন ধনী ব্যাক্তির কথা বলছিল?
হারা বললো," মদনমোহন বাবু, তার কথাই বলছিল ওরা, ওটা ভীষণ চালাক, পয়সার জন্যে সব কিছু পারে, ধূর্ত, লোভী " পান্না বললো," লোক ঠকিয়ে বড়লোক হয়েছে, গ্রামের মানুষের সরলতা কে হাতিয়ার বানিয়ে লুঠ করেছে অনেকের জমি, সম্পত্তি। "
রনি বললো, কাল তাহলে মামার সাথে গিয়ে একবার আলাপ সেরে আসব, কি বলিস?
সবাই বললো, তা যাও, কিন্তু তার টিকি ও ছুঁতে পারবে না, বড্ড চালাক!
-বেশ তবে দেখাই যাক।
সত্যের জন্য একটা চান্স নিতেই হবে, না জানি শিয়াল টা আরো কত ক্ষতি করবে সরল মানুষ গুলোর, এই বলে একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে রনি মামা বাড়ি চলে এলো,
মামা কে সমস্ত টা জানালো,
মামী রান্নাঘর থেকে শুনতে পেয়ে বললো, ওর জন্য ছোটবেলায় একবার হেনস্থা হতে হয়েছিল আমার এক বান্ধবী কে.. লজ্জায় অপবাদে পরিবার সহ গ্রাম ছাড়া হতে হয়েছিল তাকে। সরল গ্রামের মেয়ে গুলোর না জানি কত সর্বনাশ করেছে শিয়াল টা, আমি চাই ওর শাস্তি হোক, পয়সার জোর সব কিছুকে ধামাচাপা দিয়ে এসেছে রে রনি, আমরা ওর কাছে বিক্রি হয়ে যাব।
মামা বললো, দেখ বাবা আমরা এই গ্রামের লোক, তুই তো দুদিন বাদে ফিরে যাবি শহরে, আমাদের এখানে থাকা দায় হবে ছেড়ে দে এসব।
রনি বললো, তা বেশ মামা, ছেড়ে দিলাম, তবে একবার আলাপ করতে দোষ কি? সাথে শহর থেকে আনা আমার দামী হাতির দাঁতের পেন দানী টা gift হিসেবে দিয়ে আসবো, বড়লোক মানুষের মন পেয়ে লাভ আছে, তোমাদের পক্ষেও তা ভালো হবে।
মামা বলল, বেশ কাল সকালে নিয়ে যাব ক্ষণ...
রনি একবার তার বড়ো দাদা কে ফোন করে নিলো, তিনি পেশায় একজন সিবিআই অফিসার। সমস্ত ঘটনা শোনার পর তিনি বললেন, দেখ রনি ওনার সম্পর্কে নানা কাহিনী আমারো জানা, তবে পুলিশ কিছু করতে পারে নি, যদি সঠিক প্রমাণ আদায় করতে পারিস তো বাকি কাজ আমি করে দেবো, ওখানকার স্থানীয় পুলিশ সুপার আমার চেনা। আমি কথা বলে নেব, তুই অতি সাবধানে পদক্ষেপ নিবি।
পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই রনি মামার সাথে গেলো মদনমোহন বাবুর বাসায়, যেতে যা খাতির করলেন, বোঝাই যাচ্ছে না মানুষ টা খারাপ...
রনি নিজেও কখনো কখনো সংশয়ে পড়েছিল।
আসবার সময় রনি হাতির দাঁতের পেনদানীটা উপহার হিসেবে দিতে ভুলল না।
.....................................................................
উচিত সাজা:পর্ব তৃতীয়
ওরা চলে যাবে, ঠিক সেই সময় কিছু লোক ঢুকে এলো ভিতরে, রনি কে দেখে কেমন থতমত খেয়ে গেলো,
রনি বললো, এবার আমরা আসি তাহলে নমস্কার।
ফিরে এসে রনি চলে গেলো সেই পোড়ো মন্দিরে, ইতিমধ্যেই হারা, পান্না মণি ও চলে এসেছে, ল্যাপটপ খুলে CCTV তে দেখে লোক গুলো বলছে, "আজকে রাতে কামাল হবে হুজুর, জল ভূত আসবে হাহাহাহা....
বুড়ি ডাইনি হবে হাহা হাহা হাহা..
আমরা আজ একটা বেগুন এনেছি, তাতে রক্ত ভরা, এই দেখুন"
বলে তারা একটা বেগুন এর মধ্যে লাল আলতা injection এ push করে বেগুন এর ভিতর অংশ লাল করে তুললো,
তারা বললো, " কাল আপনি সভা ডাকলে সব জেলে দের সামনেই ওকে ডাইনি প্রমাণ করব, আর আমরা সেজে থাকবো ওঝা "
মদন মোহন বাবু বললেন, তারপর জেলেরা আমাকে মাছ ভরা পুকুর টা সস্তায় জলের দরে বেচে দেবে, ডাবল মুনাফা হাহা হাহা, সব বোকা গুলো! সেবার চাষা দের দলিল টা আমি ই ঠিক এভাবেই নকল করে ওদের ঠকিয়ে ছিলাম, ঝিনুক পোদ্দার সব টা জেনে গেছিলো, এখন পোড়ো মন্দিরে লাশ টা পোঁতা আছে বিরাট বট গাছের নীচে, সাথে আসল দলিল টাও হাহাহা হাহা, ডাবল মুনাফা!
রনি বললো, এক্ষুনি তোরা মাটি খুঁড়ে দেখ, হারা, পান্না ভয়ে এলো না, মণি একাই মাটি খুঁড়ে বের করলো একটা কঙ্কাল! কিন্তু না কোনো দলিল নেই সেখানে... আশে পাশে খুঁজতে লাগলো, নাহ কোথাও নেই..
এমন সময়ে মণি র চোখ গেলো অনেক ওপরে, একটা গাছের কোটরে, দেখলো একটা ছেঁড়া দলিল....
রনি ফোন করে রেডি থাকতে বললো তার বড়ো দাদা কে.. আজই শেষ হবে রহস্য।।
...............................................................................
রাতে সভা হল। মদনমোহন বাবু সব জেলে কে বড় মিষ্টি কথা তে সান্ত্বনা দিতে লাগলো, বললো দেখ নিজের টাকায় তোদের জন্যে বড় ওঝা ডেকেছি উনি যা বলবেন পালন কর নাহলে বিপদ বাড়বে।
ওঝা এলো, মন্ত্র তন্ত্র কত কি হলো! রনির দেখে হাসি পেল। শেষে ওঝা বললো, প্রত্যেক কে একটা করে বেগুন দেওয়া হবে যার বেগুনে রক্ত থাকবে সেই ডাইনি। বুড়ি ও নিলো। কারোরটা তে কিচ্ছু পাওয়া গেলো, বুড়ি বেগুন কেটে দেখে তাতে রক্ত!
জেলেরা লাঠি নিয়ে বুড়ি কে তারা করতে দৌড়ে এলো, মদন মোহন বাবু দৌড়ে এসে বললো, এসব পড়ে হবে। আগে এই পুকুর টা আমায় দিয়ে দে নাহলে তোরা কেউ বাঁচতে পারবি না, জল ভূত তোদের শেষ করে দেবে, 2000 টাকা দিচ্ছি নে.. এই দিঘী নিলে আমারও বিপদ, তবে তোদের জন্যে দয়া আসছে, নে নে.. খুশি থাক।
জেলেরা রাজি হলো।
এমন সময়ে রনি এলো বললো, থাম। তোমাদের একটা সিনেমা দেখাবো, এই বলে সে তার ল্যাপটপে সমস্ত ঘটনা দেখালো, ইতিমধ্যেই পুলিশ ও এসে উপস্থিত হয়েছে, জেলেরা বুড়ি কে ছেড়ে এবার মদন বাবুর দিকে লাঠি নিয়ে দৌড়ে গেলো, পুলিশ শান্ত হতে বললো, গ্রেপ্তার করলো মদন বাবু আর তার সাথে জড়িত সবাইকে।
খুন,ধাপ্পাবাজীর ও আরও কিছু গুরুতর অভিযোগে পরবর্তী কালে মদন বাবুর 10 বছরের জেল হয়েছিল।।
সারা গ্রামের লোকেরা ধন্য ধন্য করতে লাগলো রনিকে। রনি সকলের কাছে কুসংস্কারের বিরুদ্ধে লড়াই করার কথা বলে গ্রামটিকে নতুন আলোর দিশা দেখালো।।
আমার কথাটি ফুরোলো ।
নটে গাছটি মুরোলো।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন